বিএনপি যদি ভারতের পিচে ভারতের সঙ্গে ভারতীয় পণ্য বর্জন নিয়ে খেলতে নামে তাহলে জিততে পারবে না। বিএনপিকে নিজের পিচে খেলতে হবে।
বাংলাদেশের হিন্দু ব্রাহ্মন পিনাকী ভট্টাচার্য ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থা R&AW এর পূর্বাঞ্চলীয় কমান্ডের অধীনে কাজ করা একজন ইনফ্লুয়েন্সার। বিএনপির সমর্থকরা তাদের লিডারদের যতটা অনুকরণ করে তার চেয়ে অধিক অনুসরণ করে R&AW এর এজেন্ট পিনাকী ভট্টাচার্যকে।
এখন আমাদের মনে প্রশ্ন জাগতে পারে ভারতীয় গোয়েন্দারা কেন এমন একজন ব্যক্তিকে অর্থায়ন করবে যে সর্বদা ভারতের বিরুদ্ধে বলে?
আমাদের বাংলাদেশীদের এই প্রশ্ন যৌক্তিক। ধরুন ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থা চায় বাংলাদেশের মানুষ বিশ্বাস করুক আমেরিকা আওয়ামী লীগ সরকারের পতন ঘটাবে এবং বিএনপি সমর্থকরা যেন রাজপথে সক্রিয় না হয়।
তাহলে বাংলাদেশের কোন ব্যক্তির নির্দেশ বা বক্তব্য বিএনপির সমর্থকরা শুনবে? যদি ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির শাহারিয়ার কবির বলেন, বিএনপির সমর্থকদের বসে থাকতে তাহলে বিএনপির সমর্থকরা শুনবে? কখনো শুনবে না।
তাই এমন একজন লোককে দিয়ে বার্তা দিতে হবে যাকে বিএনপির সমর্থকরা পছন্দ করে। এখন বিএনপির সমর্থকরা কাকে পছন্দ করবে? একজন ভারতবিদ্বেষীকে নাকি ভারতপন্থীকে? অবশ্যই ভারতবিদ্বেষীকে।
তাই ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থা R&AW পিনাকী ভট্টাচার্যের মত লোককে বেছে নিয়েছে।
এই ধরনের এসেট পৃথিবীর সকল দেশের গোয়েন্দা সংস্থা কালটিভেট করে।
বাংলাদেশের গোয়েন্দাদের এই ধরনের এসেট রয়েছে। যেমন: ইলিয়াস হোসেন। ডোনাল্ড ট্রাম্পকে কেজিবি কালটিভেট করেছিল। গোয়েন্দা সংস্থার কাজই গ্রে-জোনে কাজ করা।
কাশ্মীরের ট্রেডিশনাল ভারতবিরোধী ও পাকিস্তান পন্থী দল হল হুরিয়েত কনফারেন্স।
এই হুরিয়েত কনফারেন্সের লিডাররা ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থা IB থেকে মিলিয়ন ডলার নিত ই ধরনের াইভার্শনের জন্য।
[1] কি ্রকাশ্যে এরা ভারতের বিরুদ্ধে কথা বলত।
R&AW এর সাবেক প্রধান অমরজিৎ সিং দুলত বলেন,
“Nobody is immune to bribes, not the militants, not politicians and not the separatists. Over the years, they have all been paid by intelligence agencies. We paid money to
demonstrate that what the ISI can do we can do better except kill people,”
তাই বিএনপি যদি ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থার এজেন্টদের কতৃক ভুল পথে চালিত হয় তাহলে তারা সফল হবে না।
ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থার এজেন্টরা চাইবে বিএনপিকে অন্য কাজে ব্যস্ত রাখতে। R&AW এর পূর্বাঞ্চলীয় কমান্ডের এজেন্ট পিনাকী ভট্টাচার্য জানে, এই মুক্ত অর্থনীতির বিশ্বে পন্য বয়কট অধিকাংশ সময়ে সফল হয় না। ভারতীয়দের চিনা পন্য বয়কট ব্যর্থ হয়েছে। তাই বিএনপি ক্ষমতায় তখন আসবে যখন আওয়ামী লীগের বন্ধুদের আওয়ামী লীগকে সমর্থন দেওয়া রোধ করতে পারবে।
আওয়ামী লীগের ট্রেডিশনাল মিত্র:
- রাশিয়া
- ভারত
এ এনপির সলোগান ছিল, “রুশ ভারতের দালালেরা হুশিয়ার সাবধান”।
বিএনপির ঐতিহাসিক মিত্র:
- পাকিস্তান
- চিন
- গালফ (সৌদি আরব, আমিরাত, কাতার)
জামাত ইসলামী এর ঐতিহাসিক মিত্র:
- পাকিস্তান
- তুরস্ক (একেপি)
- মুসলিম ব্রাদারহোড
আমেরিকা বিএনপির একাংশকে পছন্দ করে কিন্তু একাংশকে পছন্দ করে না। যাদের পছন্দ করে না তাদের একজন তারেক জিয়া।
আওয়ামী লীগের মূল কৌশল হল ট্রেডিশনাল মিত্রদের হাতে রাখা ও বিএনপির মিত্রদের নিজেদের দলে নিয়ে আসা।
বর্তমানে আওয়ামী লীগের ক্যাম্পে রয়েছে:
- রাশিয়া: রূপপুর পরমাণু বিদ্যুৎ প্রকল্প যেখানে ৩ বিলিয়ন ডলারের প্রকল্পে ১৩.৫ বিলিয়ন ডলার ব্যায় হয়েছে।
[2] স্বাভাবিকভাবে রাশিয়া আওয়ামী লীগের পাশে রয়েছে।এছাড়া রাশিয়া তাদের দুইটি যুদ্ধজাহাজ এডমিরাল ট্রিবুট ও এডমিরাল পেন্তেলেভ নিয়ে বাংলাদেশে এসে পশ্িমাদে বার্তা দেয়।
কূটনীতির ভাষায় একে গানবোট ডিপ্লমাসি বলে।
- ভারত: আওয়ামী লীগ বিজেপিকে পছন্দ করে না। বিজেপির হিন্দুত্ববাদী রাজনীতি বাংলাদেশে আওয়ামী লীগের জন্য বৈরী পরিস্থিতি সৃষ্ি ে। আওয়ামী লীগের ম্পর্ক মূলত গান্ধী পরিবার ও প্রনব মূখার্জির সঙ্গে ছিল।
অন্যদিকে বিজেপিতে সুষমা স্বরাজ, অরুন জেটলি ও তথাগত রায়ের সঙ্গে আওয়ামী লীগের সম্পর্ক ভাল।
কিন্তু যেহেতু ভারতে ক্ষমতায় বিজেপি তাই আওয়ামী লীগ তাদের ঐতিহাসিক সম্পর্ক অব্যাহত রেখেছে। কিন্তু বাংলাদেশের তিস্তার জলের ন্যায় অনেক প্রয়োজনীয় বিষয় ভারত থেকে পাচ্ছে না বিধায় আওয়ামী লীগ বাংলাদেশের মানুষের প্রশ্নের সম্মুখীন হচ্ছে। এছাড়া ২০০১-৬ এর মধ্যে বিএনপি জামাত জোট সরকার ভারতের নর্থ ইস্টের বিচ্ছিন্নতাবাদীদের সহায়তা করত তাই ভারতীয় সিকিউরিটি এস্টাবলিশমেন্ট তাদের সন্দেহের চোখে দেখে।তাই ভারত সরকার আওয়ামী লীগের পাশে রয়েছে।
- পাকিস্তান: পাকিস্তানের নিজেদের অবস্থা খুবই খারাপ। তাদের অর্থনীতির থেকে বাংলাদেশের অর্থনীতি ড়। াই তাদের পক্ষে বিএনপিকে সহায়তা করা কঠিন। তবুও এবার পাকিস্তানের হাইকমিশনার শেখ হাসিনা সরকারকে অভিনন্দন জানিয়েছে। খুব সম্ভবত পাকিস্তান বাংলাদেশ থেকেও ভিক্ষা চাইতে পারে।
আমার মনে হয় না বাংলাদেশের সরকার পাকিস্তানকে এখন খুব একটা গুরুত্ব দেয়।কারন ফকির মিসকিনের কেউই মূল্য দেয় না।
- চিন: বাংলাদেশে যদি বিএনপি ক্ষমতায় বসে তাহলে Indo Pacific Strategy তে যোগ দিবে যা চীনের জন্য কৌশলগতভাবে উৎকন্ঠার কারন। এমনকি আমেরিকা চাপ সৃষ্টি করে BRI থেকে বের করে দিবে।
তাই চিনের ইনভেস্টমেন্ট ও প্রভাব ধরে রাখতে আওয়ামী লীগ তাদের একমাত্র ভরসা। - গালফ: সৌদি আরব ও আমিরাত বাংলাদেশের রাজনীতি নিয়ে চিন্তিত না। তারা স্বাভাবিক সম্পর্ক বজায় রেখেছে।কাতারের আমির খুব সম্ভবত নিরপেক্ষ কিন্তু আল জাজিরা আওয়ামী লীগকে পছন্দ করে না। তারা আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে Information Warfare চালিয়ে যাচ্ছে।
- তুরস্ক: এরদোয়ানের পার্টি একেপির সঙ্গে বাংলাদেশের জামাত ইসলামী এর সম্পর্ক রয়েছে। কিন্তু আওয়ামী লীগ তুরস্ক থেকে অস্ত্র কিনছে বিধায় তুরস্কে আওয়ামী লীগের সঙ্গে রয়েছে। কিন্তু তাদের একটি অংশ যাদের সঙ্গে মুসলিম ব্রাদারহোড ও জামাতের যুক্ত তারা TRT এর মাধ্যমে আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে নেরেটিভ সৃষ্টি করছে।
- আমেরিকা: মার্কিন স্টেক ডিপার্টমেন্ট অর্থাৎ এন্থন ব্লিকন, ডোনাল্ড লু, ভিক্টোরিয়া নুলান্ডরা বিএনপির পক্ষে কিন্তু NSC ও পেন্টাগন বাংলাদেশে কোনপ্রকার হস্তক্ষেপের বিরুদ্ধে।
- মুসলিম ব্রাদারহোড: মুসলিম ব্রাদারহোড ও এক্সাইল বাংলাদেশের জামাতের একটিভিস্ট এবং পাকিস্তান জামাতের একটিভিস্টরা পশ্চিমাদেশে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানের দারস্থ হয়ে চেষ্টা করছে আওয়ামী লীগের উপর চাপ সৃষ্টি করতে।
বর্তমানে বাংলাদেশ জামাত ইসলামী এর মূল ঘাঁটি ইস্ট লন্ডন মসজিদ।
সেখানে বাংলাদেশের জামাত ইসলাম, পাকিস্তানের জামাত ইসলাম এবং মুসলিম ব্রাদারহোডের মিলনায়তন।নিসন্দেহে বিএনপির লোকদের সমাগম রয়েছে সেখানে
আমিত ারা ICNA এর সাায্য পাচ্ছে। আমেরিকায় ICNA পাকিস্তান জামাত ইসলামীর এর সাবেক সদস্যরা তৈরি করেছে।
বিএনপির করনীয় কি?
বিএনপিকে চিন অথবা ভারত এই দুটির একটি দেশকে নিজের পক্ষে নিয়ে আসতে হবে। বিএনপি যদি আমেরিকার সঙ্গে Indo-Pacific নিয়ে কোন চুক্তি করে তাহলে চিন তাদের পক্ষে থাকবে না। আবার বিএনপি যদি Indo-Pacific এ আসতে না চায় তাহলে আমেরিকা তাদের পক্ষে থাকবে না। আমেরিকা বাংলাদেশের গনতন্ত্রের জন্য চিন্তিত নয় তারা নিজের কৌশলগত স্বার্থের জন্য গনতন্ত্র ও মানবাধিকারের কথা বলে। তাই বিএনপির উচিত ভারতকে টার্গেট করা।দিললিতে প্গজ সরন, পিনাক রঞ্জন, বিনা সিক্রি অর্থাৎ প্রো-আওয়ামী লীগ লবি চাইবে যেন বিএনপির সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক ভাল না হয়। বিএনপি এদের কাউন্টার করা নিসন্দেহে চ্যালেঞ্জ।
দেশের ভেতরে আওয়ামী লীগের অবস্থা কেমন থাকবে?
এটি সম্পূর্ণ নির্ভর করবে অর্থনীতির উপর। World Bank এর মতে বাংলাদেশের GDP ৫.৬% থাকবে আগামী দিনগুলোতে। তাই আওয়ামী লীগের দেশ চালাতে সমস্যা হবে না।
ফুটনোটগুলি
RAW ex-chief Dulat says intel agencies bribe J-K militants, parties
3 thoughts on “বিএনপি এত চেষ্টা করছে তবুও বাংলাদেশে “ভারতীয় পণ্য বর্জন” কর্মসূচি সফল হচ্ছে না কেনো?”